মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩, ০৯:৫২ পূর্বাহ্ন

অভিযান সমাপ্তির আড়াই ঘন্টা পর ভেসে উঠল আরো ১ লাশ

রিপোর্টারের নাম
  • প্রকাশিতঃ মঙ্গলবার, ৩০ জুন, ২০২০
  • ৫৭ জন নিউজটি পড়েছেন

ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীতে লঞ্চ ডুবির ঘটনায় উদ্ধার অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণার আড়াই ঘণ্টা পর আরেকটি লাশ ভেসে উঠেছে। তাকে নিয়ে সোমবারের এই লঞ্চ ডুবিতে ৩৪ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা এরশাদ হোসাইন জানান, মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে একজন পুরুষের লাশ দুর্ঘটনাস্থলের ৫০ গজের মধ্যে ভেসে ওঠে। মৃতদেহটি এখনও কেউ শনাক্ত করেনি।

সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে লঞ্চটি ডুবে যাওয়ার পর সারা দিনের উদ্ধার অভিযানে ৩২ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। মঙ্গলবার লঞ্চটি টেনে তোলার সময়ে আরেকজনের লাশ পাওয়া যায়। দুপুর আড়াইটায় উদ্ধার অভিযানের সমাপ্তি টানে বিআইডব্লিউটিএ।

সে সময় নৌ পরিবহন খাতের এ নিয়ন্ত্রক সংস্থার যুগ্ম পরিচালক এ কে এম আরিফ উদ্দিন বলেছিলেন, ‘ডুবে যাওয়া লঞ্চ এমএল মর্নিং বার্ডকে টেনে সদরঘাটের কুমিল্লা ডকইয়ার্ডের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ভেতরে আর কোনো লাশ পাওয়া যায়নি। বেলা আড়াইটায় উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা ঘোষণা করা হয়েছে।’

তবে আরো কারও লাশ ভেসে উঠে কি না সেজন্য ফায়ার সার্ভিসের একটি দল সেখানে রয়েছে বলে রাতেও থাকবে বলে বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা এরশাদ হোসেইন জানান।

এমএল মর্নিং বার্ড নামের ওই লঞ্চটি সোমবার সকালে মুন্সিগঞ্জের কাঠপট্টি থেকে যাত্রী নিয়ে সদরঘাটের দিকে আসছিল। শ্যামবাজারের কাছে বুড়িগঙ্গায় ময়ূর-২ নামের আরেকটি বড় লঞ্চের ধাক্কায় সেটি ডুবে যায়।

সোমবার দুপুর পর্যন্ত উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে ৩০টি লাশ উদ্ধার করেন। এছাড়া স্থানীয়রা আরো দুজনকে উদ্ধার করে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে লঞ্চডুবির প্রায় ১৩ ঘণ্টা পর সোমবার রাত সোয়া ১০টার দিকে একজনকে জীবিত উদ্ধারের কথা জানায় ফায়ার সার্ভিস।

রাতভর তল্লাশির পর এক ঘণ্টা বিরতি দিয়ে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় আবার তল্লাশি শুরু হয়। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদের পাশাপাশি নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড, নৌ পুলিশ এবং বিআইডব্লিউটিএর কর্মীরাও এই অভিযানে অংশ নেন।

দুপুরে নদীতে ডুবে থাকা লঞ্চটির ভেতরে মর্নিং বার্ডের ইঞ্জিন গ্রিজার আশিক হোসেনের লাশ পান ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা।

সোমবার পাওয়া ৩২ জনের লাশ পরিচয় শনাক্তের পর সোমবারই স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এখনও কেউ নিখোঁজ রয়েছেন কি না, তা স্পষ্ট নয়।

নদীর ৬০-৭০ ফুট গভীরে উল্টে থাকা লঞ্চটিকে টেনে তুলতে ১১টি এয়ার লিফটিং ব্যাগ ব্যবহার করা হয়। এর একেকটি ব্যাগ ৮টন ওজন তুলতে পারে। বিআইডব্লিউটিএর ছোট উদ্ধারকারী জাহাজ দুরন্তও এ কাজে যুক্ত ছিল।

সোমবার দুর্ঘটনার পর সদরঘাটের একটি সিসি ক্যামেরার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে পেছন দিকে চলতে থাকা ময়ূর-২ এর ধাক্কায় তুলনামূলকভাবে আকারে অনেক ছোট মর্নিং বার্ডকে মুহূর্তের মধ্যে বুড়িগঙ্গায় ডুবে যেতে দেখা যায়।

সোমবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার পর ওই ভিডিও দেখার কথা জানিয়ে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার যে ধরন, তাতে তার মনে হয়েছে ধাক্কা দেয়ার বিষয়টি ‘পরিকল্পিত’।

এ দুর্ঘটনায় ‘অবহেলাজনিত মৃত্যু’ ঘটানোর অভিযোগ এনে ইতোমধ্যে ময়ূর-২ লঞ্চের মালিক, মাস্টারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে নৌ পুলিশ। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় এবং বিআইডব্লিউটিএ-এর পক্ষ থেকে আলাদা দুটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরির আর নিউজ
© All rights reserved © vira-l.com 2017-2022
themesba-lates1749691102
Bengali English