দেশে করোনার প্রাদুর্ভাবের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। গেল জুন মাসে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক শূন্য ২ শতাংশে। এক মাস আগেও এই হার ছিল ৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ। এ সময় খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা কমলেও খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতির হার তুলনামূলক বেশি বেড়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ তথ্য গতকাল সোমবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকের পর পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।
এতে দেখা যায়, গেল জুন মাসে দেশে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৫৪ শতাংশে, যা মে মাসে ছিল ৫ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। এই সময়ে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে মূল্যস্ফীতির হার ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ২২ শতাংশে। মূল্যস্ফীতির তথ্য বিশ্লেষণ করে বিবিএস বলেছে, এক মাসের ব্যবধানে দেশে চাল, ডিম, ব্রয়লার মুরগি, শাক-সবজি, আলু, পটোল, বেগুন, বরবটি, ঢ্যাঁড়শ, করলা, টম্যাটো, গাজর ও পেঁপের দাম বেড়েছে। সেই সঙ্গে শুকনো মরিচ, আদা, রসুনসহ ইত্যাদির দাম বাড়ার কারণে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে। বিবিএসের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, মে মাসের তুলনায় জুন মাসে শহরে তুলনামূলক খাদ্যপণ্যের দাম বেশি হারে বেড়েছে। অবশ্য জুনে মূল্যস্ফীতি বাড়ার জন্য দেশের বিভিন্ন এলাকায় বন্যাকে দায়ি করেছেন মন্ত্রী।
শহরাঞ্চলে জুন মাসে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৭২ শতাংশে, যা মে মাসে ছিল ৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ। শহরাঞ্চলে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে মূল্যস্ফীতির হার ৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ৫ দশমিক ২৭ শতাংশ।
অন্যদিকে গ্রামীণ অঞ্চলে জুন মাসে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৪৭ শতাংশে, যা মে মাসে ছিল ৫ দশমিক ৬১ শতাংশ। গ্রামীণ অঞ্চলে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে মূল্যস্ফীতির হার ৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ৫ দশমিক ১৮ শতাংশ।
সার্বিকভাবে গেল ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৫২ শতাংশে। মূল্যস্ফীতির তথ্য দেওয়ার পাশাপাশি দেশে মজুরি সূচকও প্রকাশ করে বিবিএস। এই তথ্যে দেখা যায়, মে মাসের তুলনায় জুন মাসে দেশে মজুরি বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষি, শিল্প ও সেবা—সব খাতেই মজুরি সূচক সামান্য বেড়েছে। সার্বিকভাবে জুন মাসে মজুরি সূচক দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৯০ শতাংশে, যা মে মাসে ছিল ৬ দশমিক ৮৯ শতাংশ।