শনিবার, ২৫ মার্চ ২০২৩, ০২:০৮ পূর্বাহ্ন

করোনায় ৬ মাসে গেল ৫ লাখ প্রাণ, কোথাও বেশি কোথাও কম

রিপোর্টারের নাম
  • প্রকাশিতঃ মঙ্গলবার, ৩০ জুন, ২০২০
  • ৪৪ জন নিউজটি পড়েছেন

আজ থেকে ঠিক ছয় মাস আগে চীনের উহানে শনাক্ত হয়েছিলেন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগী। এরপর সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বজুড়ে। এত দিনে সংক্রমণ ও মৃত্যুর ভয়ানক পরিস্থিতি মোকাবিলা করে সামলে উঠেছে কিছু কিছু দেশ। আবার অনেক দেশ এখনো ভুগছে চরমভাবে, দিনে দিনে পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। সংক্রমণ বৃদ্ধির সঙ্গে বেড়ে চলেছে মৃত্যু। এসব দেশের অনেকগুলো আবার বেশ জনবহুল। এই অবস্থায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করে বলেছে, করোনা মহামারি নতুন এক বিপজ্জনক পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে।

করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে সংক্রমণ এরই মধ্যে এক কোটি ছাড়িয়ে গেছে। মহামারির সার্বক্ষণিক তথ্য প্রকাশ করছে ওয়ার্ল্ডোমিটারস ডট ইনফো। এই ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, গতকাল সোমবার বাংলাদেশ সময় রাত পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ১ কোটি ৩ লাখ ছুঁই ছুঁই। মৃত্যু ৫ লাখ ৫ হাজারের বেশি। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৫৫ লাখের বেশি রোগী।

কিন্তু এখন পর্যন্ত মহামারি নিয়ন্ত্রণে আসার কোনো আভাস পাওয়া যাচ্ছে না। উদ্ভাবিত হয়নি স্বীকৃত কোনো চিকিৎসাব্যবস্থা কিংবা প্রতিষেধক। তবে দেশে দেশে চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা জোর চেষ্টা করছেন যত শিগগিরই পারা যায় মানুষের হাতে ওষুধ ও প্রতিষেধক তুলে দিতে।

রোগী দ্রুত বাড়ছে যেসব দেশে

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়া, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা এবং আফ্রিকায় করোনার সংক্রমণ এখনো ঊর্ধ্বমুখী। উত্তর আমেরিকার দেশ যুক্তরাষ্ট্র সংক্রমণ ও মৃত্যুতে বিশ্বের শীর্ষ দেশ। দেশটিতে গতকাল পর্যন্ত ২৬ লাখের বেশি, অর্থাৎ বিশ্বের মোট শনাক্ত রোগীর এক-চতুর্থাংশ। মৃত্যু ১ লাখ ২৮ হাজার ছাড়িয়েছে। কয়েক দিন ধরে দেশটিতে দৈনিক রোগী শনাক্তের সংখ্যা ৪০ হাজারের ঘরে।

সংক্রমণ ও মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের পরেই অবস্থান করছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। গতকাল পর্যন্ত এই দেশে সাড়ে ১৩ লাখের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৫৭ হাজারের বেশি। ব্রাজিলের বড় শহর সাও পাওলো ও রিওডি জেনিরোয় করোনার সংক্রমণ দ্রুত ছড়াচ্ছে। দেশটির অন্যান্য অঞ্চলেও সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণহীন।

ছয় মাসের মধ্যে বিশ্বে সংক্রমণের সংখ্যা এক কোটি এবং মৃত্যু ছাড়িয়ে গেছে পাঁচ লাখ।
প্রায় একই অবস্থা দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভারতে। সংক্রমিত রোগীর সংখ্যায় বিশ্বের চতুর্থ শীর্ষ এই দেশে গতকাল পর্যন্ত সাড়ে ৫ লাখের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছেন। মারা গেছেন সাড়ে ১৬ হাজারের বেশি। কিন্তু ভারতের কিছু ঘনবসতিপূর্ণ রাজ্যে পরীক্ষা কার্যক্রম অপেক্ষাকৃত কম জোরালো।

বিবিসির ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ইকুয়েডরে একপর্যায়ে সড়কে মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। কারণ, সেগুলোর দাফন ও সৎকার করে উঠতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। গুরুত্বপূর্ণ একটি পরীক্ষাগারে প্রয়োজনীয় রাসায়নিক ফুরিয়ে যাওয়ায় পরীক্ষা কার্যক্রম থমকে গিয়েছিল। আবার দুর্বল অর্থনীতির দেশে লকডাউন দিলে মহামারির চেয়ে বড় ঝুঁকির আশঙ্কা তৈরি হয়।

পরিস্থিতি খারাপ মেক্সিকোতেও। সেখানে প্রতিদিন প্রায় হাজারো মানুষের মৃত্যু হচ্ছে।

মহামারি যেখানে নিয়ন্ত্রণে

প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপদেশ নিউজিল্যান্ড ব্যাপক জোরালো পদক্ষেপ নিয়ে মহামারি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। দেশটিতে সম্প্রতি টানা ২৪ দিন কোনো রোগী শনাক্ত হননি। ওয়ার্ল্ডোমিটারস ডট ইনফোর তথ্যমতে, গতকাল পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৫২৮ জন। তাঁদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৪৮৪ জন। মারা গেছেন ২২ জন। সফলভাবে মহামারি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারায় নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্নের সরকার ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়াও সফলভাবে মহামারি নিয়ন্ত্রণ করে প্রশংসিত হয়েছে। দেশটি লকডাউন না করেই মহামারি নিয়ন্ত্রণ করেছে। তাদের অন্যতম হাতিয়ার ছিল ব্যাপক পরীক্ষা কার্যক্রম, রোগী আইসোলেশন, রোগীর সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের শনাক্তকরণ। এ কাজে তাঁদের প্রযুক্তির ব্যবহার ছিল প্রশংসনীয়। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার কর্তৃপক্ষ বলেছে, সেখানে মহামারির দ্বিতীয় ধাক্কার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। রাজধানী সিউলে একটি নৈশক্লাব থেকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। তবে এই ক্লাস্টারে রোগীর সংখ্যা অনেক কম।

ভিয়েতনামও প্রশংসার দাবিদার। দেশটিতে করোনায় এ পর্যন্ত কেউ মারা যাননি। রোগী শনাক্ত হয়েছেন ৩৫৫ জন। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩৩০ জন।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরির আর নিউজ
© All rights reserved © vira-l.com 2017-2022
themesba-lates1749691102
Bengali English