করোনার কারণে খেলা বন্ধ থাকায় স্বাভাবিকভাবে অর্থনৈতিক সমস্যায় পড়েছেন আর্চাররাও। এবার তাদের পাশে দাঁড়াল বিশ্ব আর্চারি সংস্থা। সারা বিশ্বের বাছাইকরা ৩৫ জন তিরন্দাজকে ১ লাখ ৯০ হাজার ইউএস ডলার অনুদান দেবে সংস্থাটি। এই তহবিল থেকে বাংলাদেশের আর্চার রোমান সানা পাচ্ছেন ৫ হাজার ইউএস ডলার। গত দুই বছর যেন সোনায় মোড়ানো ছিল রোমানের। গত বছর হল্যান্ডে বিশ্ব আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের প্রথম ব্রোঞ্জ পদক এনে দেন এই তরুণ।
সরাসরি টোকিও অলিম্পিকে খেলার সুযোগ করে নেন রোমান। ফিলিপাইনে এশিয়া কাপে জেতেন সোনা। আর বছরের শেষে নেপালে এসএ গেমসে ব্যক্তিগত ও দলগত মিলিয়ে রিকার্ভ ইভেন্টে জেতেন তিনটি স্বর্ণ পদক।
সারা বিশ্বের আর্চারদের সহযোগিতা করার জন্য একটি তহবিল গঠন করেছিল বিশ্ব আর্চারি ফাউন্ডেশন। যেখানে সর্বমোট জমা পড়েছে ১ লাখ ৯০ হাজার ডলার। এ টাকা বিতরণের জন্য আবেদনের আহ্বান করা হয়েছিল। যেখানে আবেদন করেন মোট ১২২ জন আর্চার। রোমান সানাও ছিলেন সেখানে।
প্রাথমিক এ তালিকা থেকে প্রথমে ৪০ জনকে বাছাই করা হয়। পরে আরও যাচাই-বাছাই শেষ করে ১৯ দেশের মোট ৩৫ জন আর্চারকে অনুদান দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সবাইকে দেড় হাজার থেকে সাড়ে ৭ হাজারের ডলারের মধ্যে সাহায্য দেয়া হবে। সানা পেয়েছেন ৫ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৪ লাখ টাকার কিছু বেশি। এ টাকা দেয়ার আগে বিশ্ব আর্চারি ফাউন্ডেশন আবার জুড়ে দিয়েছে শর্ত। নিজের ইচ্ছেমত পুরো টাকাটা খরচ করা যাবে না। এর মধ্যে ৮০ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ করতে হবে আর্চারি সংশ্লিষ্ট কাজে। বাকিটা খরচ করা যাবে ব্যক্তিগত প্রয়োজনে।
বাংলাদেশ আর্চারি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রাজীব উদ্দীন চপল জানিয়েছেন, আমরা রোমান সানার জন্য কিছু দিন আগে বিশ্ব আর্চারি সংস্থায় একটা অনুদানের আবেদন করেছিলাম। ওরা সব কিছু যাচাইবাছাই করে এই অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। টাকা পাওয়ার বিষয়টা প্রক্রিয়াধীন আছে। আশা করছি, খুব দ্রæত রোমানের ব্যাংক একাউন্টে টাকা জমা হয়ে যাবে।’
অনুদান সর্ম্পকে রোমান সানা জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে তিনি গত মাসে আবেদন করেছিলেন। যার নিশ্চয়তা এসেছে সপ্তাহখানেক আগে। এখন শুধু ব্যাংক একাউন্ট ও অন্যান্য কিছু কাজ শেষ করলেই চলে আসবে অনুদানের পুরো টাকা।
রোমান সানা বলেছেন, এক মাস আগে আমি আবেদন করেছিলাম। এক সপ্তাহ আগে কনফার্মেশন মেইল পেয়েছি। তবে টাকা খরচের ব্যাপারেও শর্ত দেয়া রয়েছে। মোট টাকা ৮০ শতাংশ আর্চারির কাজেই ব্যবহার করতে হবে। বাকিটা নিজের প্রয়োজনে ভাঙতে পারব। আমি ঠিক করেছি মায়ের চিকিৎসার কাজে ব্যবহার করব টাকাটা।’
রোমান সানাকে এই অনুদান পাইয়ে দিতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন জাতীয় দলের জার্মান কোচ মার্টিন ফ্রেডরিখ। তিনি বলছিলেন, এই অনুদান পেতে আমাকে অনেক কাগজপত্র পাঠাতে হয়েছে বিশ্ব আর্চারি সংস্থায়। শেষ পর্যন্ত ও এই টাকা পাচ্ছে বলে আমি খুব খুশি। তবে এই টাকাটা শুধু ওর পরিবারের জন্যই নয় , নিজের পারফরম্যান্সের উন্নতির জন্যও খরচ করতে হবে।