বুধবার, ২২ মার্চ ২০২৩, ০৩:৩৮ অপরাহ্ন

পুঠিয়ায় ফিস ফিডের ভেজাল কারখানা জব্দ

রিপোর্টারের নাম
  • প্রকাশিতঃ শনিবার, ৪ জুলাই, ২০২০
  • ৩৭ জন নিউজটি পড়েছেন

রাজশাহীর পুঠিয়ায় যত্রযত্র ভাবে গড়ে উঠেছে মাছের খাবার তৈরির ভেজাল ও অবৈধ কারখানা। কর্তৃপক্ষের নজরদারী না থাকায় কারখানার মালিকরা চামড়ার ট্যানারির বর্জ্য ও মেয়দ উত্তীর্ণ বিভিন্ন উপকরণ মিশ্রণে তৈরি করছে ফিস ফিড। আর চাষিরা অল্প সময়ে মোটা তাজাকরণ করে মাছ বাজারজাত করার আশায় এসব ফিড কিনছেন।

ছেন। ওই মাছ খেলে চরম স্বাস্থ্য ঝুকিতে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য বিভাগ।

জানা গেছে, মৎস্য চাষিদের ঘিরে অসাধু ব্যবসায়ীরা উপজেলার বাসা বাড়িসহ কয়েকটি স্থানে ভেজাল ফিসফিড কারখানা গড়ে উঠেছে। কারখানাগুলো থেকে প্রতিদিন মাছের বিভিন্ন প্রকার খাদ্য ও ওষুধ তৈরি করে চাষিদের মাঝে সরবরাহ করা হয়। কারখানার মালিকরা মাছের খাদ্য তৈরি করতে চামড়া ট্যানারির বর্জ্য, মেয়াদ উত্তীর্ণ শুটকি মাছের ডাস্ট, ডাল, কাঠের গুড়া ও কেরোসিনসহ বিভিন্ন লিকুইড ব্যবহার করা হচ্ছে।

মাছের খাদ্য ভেজাল প্রতিরোধ করতে সম্প্রতি মাঠে নেমেছেন উপজেলা প্রশাসন। শনিবার দুপুরে শিলমাড়িয়া এলাকার বিদিরপুর গ্রামে অভিযান চালায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওলিউজ্জামান। সেখানে একটি বাড়িতে অবৈধ মাছের খাদ্য তৈরির কারখানার সন্ধান পাওয়া যায়। দেখা গেছে ওই কারখানায় মাছের খাদ্য তৈরিতে অবৈধ বিভিন্ন লিকুইডের পাশাপাশি কেরোসিন ব্যবহার করা হচ্ছে। ওই অভিযোগে কারখানার মালিক ওই গ্রামের ওয়াজেদ আলীর ছেলে আসাদুল ইসলামকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরে ওই কারখানায় ব্যবহৃত প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকার বিভিন্ন উপকরণ ধ্বংস করা হয়েছে। আর গত সপ্তাহে ধোপাপাড়া এলাকায় অবস্থিত এনাম ফিডমিল মালিক আতিকুর রহমানকে মেয়াদ উত্তীর্ণ খাদ্য উপকরণ সংরক্ষণ করার অপরাধে ৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। পাশাপাশি ওই কারখানার ২৫৫ বস্তা খাদ্য উপকরণ ধ্বংস করা হয়।

ভালুকগাছি এলাকার মাছ চাষি নবির উদ্দীন বলেন, বড় মাছ উৎপাদন ও তাজা মাছ সরবরাহে আমাদের এলাকার সুনাম রয়েছে। তবে অনেক চাষিরা অল্পদিনে মাছের আকার বড় করতে পুকুরগুলোতে ফিড ব্যবহার করছেন। আর ওই চাষিদের ঘিরে কিছু অসাধু লোকজন উপজেলার কয়েকটি স্থানে ফিস ফিড তৈরি করে বাজারজাত করছে। যথাযথ কর্তৃপক্ষ ওই ভেজালকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আমাদের এই অঞ্চলের মাছ চাষের চরম বিপর্যয় ঘটবে।

এ বিষয়ে রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক গোপেন্দ্রনাথ আচার্য্য বলেন, মাছের খাদ্য তৈরিতে ট্যানারির বর্জ্য, মেয়াদ উত্তীর্ণ শুটটি মাছের ডাস্ট, ডাল, কাঠের গুড়া, কেরোসিনসহ যে সকল লিকুইড ব্যবহার করছে তা মানব দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এই খাদ্যতে উৎপাদিত মাছ খেলে মানবদেহের লিভার জন্ডিস ক্যান্সারসহ নানা রোগে আক্রান্তের ঝুঁকি থাকে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওলিউজ্জামান বলেন, মাছের খাদ্য ভেজাল ও মেয়াদ উত্তীর্ণ উপকরণ ব্যবহার করায় সম্প্রতি এনাম ফিড মিলকে অর্থদন্ড করা হয়েছে। অপরদিকে শিলমাড়িয়া এলাকার একটি বাড়িতে মাছের ভেজাল খাদ্য তৈরির কারখানা সন্ধান পাওয়া গেছে। ওই কারখানায় মাছের খাদ্য তৈরিতে বিভিন্ন লিকুইডের পাশাপাশি কেরোসিন ব্যবহারের আলামত পাওয়া যায়। এ ঘটনায় কারখানার মালিককে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি ওই ভেজাল ও মেয়াদ উত্তীর্ণ উপকরণ গুলো ধ্বংস করা হয়েছে। ভেজাল বিরোধী এই অভিযান অব্যহত থাকবে।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরির আর নিউজ
© All rights reserved © vira-l.com 2017-2022
themesba-lates1749691102
Bengali English