শনিবার, ২৫ মার্চ ২০২৩, ১২:৫২ পূর্বাহ্ন

মামলা গ্রেপ্তার মৃত্যু বাড়লেও থামেনি কারবার

রিপোর্টারের নাম
  • প্রকাশিতঃ শুক্রবার, ২৬ জুন, ২০২০
  • ৪১ জন নিউজটি পড়েছেন

দেশে মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানে মামলা, গ্রেপ্তার, মাদকদ্রব্য উদ্ধার এবং মৃত্যুর ঘটনা বেড়েছে। তবে এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি মাদকের কারবার। মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্যমতে, দুই বছর এক মাসে বিশেষ অভিযানে নিহত হয়েছেন ৫৪৩ জন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে সব সংস্থা মিলে এক লাখ ২৪ হাজার ৯৮ মামলায় এক লাখ ৬২ হাজার ৮৪৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত বছর উদ্ধার করা হয়েছে তিন কোটি চার লাখ ৪৬ হাজার ৩২৮ পিস ইয়াবা। করোনার মহামারির মধ্যে মাদক কারবার চলছে। এ কারণে বিশেষ পরিকলল্পনায় অভিযান শুরু করা হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

এমন পরিস্থিতিতে আজ শুক্রবার পালিত হচ্ছে ‘মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস’। প্রতিবছর দিবসটি বিভিন্ন অনুষ্ঠানিকতায় পালিত হলেও এবার করোনা মহামারীর কারণে থাকছে না সেসব অনুষ্ঠান। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রতি বছরের মতো এই দিবসে ‘অ্যানুয়্যাল ড্রাগ রিপোর্ট’ বা বার্ষিক মাদকদ্রব্য প্রতিবেদন প্রকাশ করছে না ডিএনসি। পরবর্তীতে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৯৮৮ সাল থেকে প্রতি বছরের ২৬ জুন সারা বিশ্বে মাদকবিরোধী দিন হিসেবে ব্যাপক কর্মসূচী পালিত হয়। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে- ‘সুস্থ্য জ্ঞানে সঠিক যত্ন হবে, জ্ঞানের আলোয় মাদক দূরে রবে’।

ডিএনসির মহাপরিচালক (ডিজি), সচিব মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘এবার পরিস্থিতির কারণে সরাসরি অনুষ্ঠান বাদ দিয়ে ভার্চুয়াল কিছু প্রগ্রাম, মোবাইল ফোনে ম্যাসেজ এবং অফিসে ব্যানার ফ্যাস্টুন দিয়ে দিবসটি পালন করা হবে। অভিযান জোরদার হয়েছে বলেই মামলা ও উদ্ধার বেড়েছে। এরপরও থামেনি কারবার। এই দিবসে আমাদের চ্যালেঞ্জ বর্তমান সময়ে মাদকবিরোধী কাজ করতে অধিদপ্তরকে আরো সক্রিয় করে তোলা। গাড়ি, প্রশিক্ষণসহ কিছু সুবিধা বাড়ানোর মাধ্যমে অভিযান ও অন্যান্য কাজে গতি আনার চেষ্টা করা হবে।’

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্যমতে, ২০১৮ সালের ১৫ মে থেকে গত বুধবার (২৪ জুন) পর্যন্ত মাদকবিরোধী অভিযানে নিহত হয়েছে ৫৪৩জন। এর মধ্যে পুলিশের অভিযানে ২৬১, র‍্যাবের অভিযানে ১৪৭, ডিবি পুলিশের অভিযানে ৬২, বিজিবির অভিযানে ৭০ জন নিহত হন।

ডিএনসির তথ্যমতে, সব সংস্থা মিলে গত বছর এক লাখ ২৪ হাজার ৯৮টি মামলায় এক লাখ ৬২ হাজার ৮৪৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০১৮ সালে এক লাখ ১৯ হাজার ৮৭৮ মামলায় এক লাখ ৬১ হাজার ৩২৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০১৭ সালে এক লাখ ছয় হাজার ৫৪৬ মামলায় এক লাখ ৩২ হাজার ৮৯৩ গ্রেপ্তার; ২০১৬ সালে ৬৯ হাজার ৭৩৯ মামলায় গ্রেপ্তার ৮৭ হাজার ১৪ জন; ২০১৫ সালে ৫৭ হাজার ১৩৪ মামলায় গ্রেপ্তার ৭০ হাজার ১৫৯ জন; ২০১৪ সালে ৫১ হাজার ৮০১ মামলায় গ্রেপ্তার ৬২ হাজার ৮০ জন এবং ২০১৩ সালে ৪০ হাজার ২৫০ মামলায় গ্রেপ্তার ৪৭ হাজার ৫৩১ জন। ডিএনসির মামলার পরিমাণও বেড়েছে। ২০১৮ সালে ১৩ হাজার ৭৯৩ মামরায় গ্রেপ্তার করা হয় ১৫ হাজার ১১৬ জনকে।

ডিএনসির প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, কয়েক বছর ইয়াবা উদ্ধার বাড়লেও গত বছর একটু কমেছে। তবে বেড়ে গেছে ফেনসিডিল উদ্ধারের পরিমাণ। গত বছর উদ্ধার করা হয়েছে তিন কোটি চার লাখ ৪৬ হাজার ৩২৮ পিস ইয়াবা। ২০১৮ সালে পাঁচ কোটি ৩০ লাখ ৪৮ হাজার ৫৪৮ পিস। ২০১৭ সালে ছিল চার কোটি ৭৯ হাজার ৪৪৩টি। ২০১৬ সালে দুই কোটি ৯৪ লাখ হাজার ৫০ হাজার ১৭৮ পিস। ২০১৫ সালে দুই কোটি ১৭ হাজার, ২০১৪ সালে ৬৫ লাখ ১৩ হাজার, ২০১৩ সালে ২৮ লাখ ২১ হাজার ৯৬টি, ২০১২ সালে ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৫টি ও ২০১১ সালে দশ লাখ ৭৭ হাজার ৩০১ টি ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করা হয়।

সূত্র জানায়, ২০১১ সালে নয় লাখ ৩৪ হাজার ১৩ বোতল, ২০১২ সালে ১৩ লাখ ৪৬ হাজার ৫৭৮ বোতল, ২০১৩ সালে নয় লাখ ৮৭ হাজার ৭৮১ বোতল, ২০১৪ সালে সাত লাখ ৪১ হাজার ১৩৭ বোতল, ২০১৫ সালে আট লাখ ৭০ হাজার ২১০ বোতল, ২০১৬ সালে ৫৬ লাখ ৬৫ হাজার বোতল, ২০১৭ সালে সাত লাখ ২০ হাজার ৪৩ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করে বিভিন্ন সংস্থা। ২০১৮ সালে ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে সাত লাখ ১৫ হাজার ৭২৯ বোতল। গত বছর (২০১৯ সালে) নয় লাখ ৭৬ হাজার ৬৬৩ বোতল উদ্ধার করা হয়েছে।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরির আর নিউজ
© All rights reserved © vira-l.com 2017-2022
themesba-lates1749691102
Bengali English