দেশে বিরাজমান রাজনৈতিক দলগুলোর আত্মসমালোচনা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম বীর প্রতীক।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ও সরকারের লোকজন বলছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা আর ফিরে আসবে না। ১৯৯৬ এর আন্দোলনে বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিতে বাধ্য হয়েছিল। সেই সময়ের মতো পুনরায় আন্দোলন করতে পারলে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে।
সোমবার (২৪ অক্টোবর) সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে সমমনা রাজনৈতিক দলসমূহ আয়োজিত ‘নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন ও জনগণের প্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর আত্ম-সমালোচনার প্রয়োজন। ১৯৯৪ সালে জামায়াত যদি তত্ত্বাবধায়ক আন্দোলন না করত তাহলে আওয়ামী লীগ এ আন্দোলন করতো কিনা জানি না। তারা হয়তো সুদূরপ্রসারী চিন্তা নিয়ে এটি করেছেন। কিন্তু রাজনৈতিক দলসমূহের সঙ্গে আলোচনা না করে তত্ত্বাবধায়ক প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করেছে। রাজনৈতিক দলগুলো তাদের দাবির সঙ্গে একমত ছিল না। একলা চলো নীতি কখনো সফলতা আনে না।
মেজর ইব্রাহিম বলেন, দেশের অর্জন উন্নয়ন অবনতির জন্য কোনো রাজনৈতিক দল এককভাবে দায়ী নয়। এটা ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। ২০২২ সালে এসেও দেশে কোনো ক্ষতি হলে তা সকলেরই ক্ষতি হবে। দেশের সম্পদ ১৮ কোটি জনগণের। ১৮ কোটি জনগণের ক্ষতি করার অধিকার সরকারের নেই। দেশের অর্জনকে রক্ষা করার জন্য দরকার সরকারের পরিবর্তন। সাংবিধানিকভাবে ও আলোচনার মাধ্যমে পরিবর্তন হলে ভালো। যখন এভাবে সম্ভব হয়নি তখন অসাংবিধানিকভাবেই হয়েছে ইতিপূর্বে।
সৈয়দ ইব্রাহিম বলেন, গণতন্ত্রের জন্য অনেকেই জীবন দিয়েছেন তাদের রক্ত যদি বৃথা যায় তাহলে আমাদের সেই জীবন দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা নেই। আমরা সফল রক্ত দেওয়ার পক্ষপাতী। আমরা ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের হত্যাকাণ্ড পুনরাবৃত্তি যেমন চাই না, তেমনি একটি সরকারকে দীর্ঘ সময়ও চাই না।
অনুষ্ঠানে উপস্থিতি কম দেখে তিনি বলেন, সমমনা রাজনৈতিক দলসমূহের প্রথম অনুষ্ঠানেই নেতার সংখ্যা বেশি, শ্রোতার সংখ্যা কম। বক্তার সিরিয়ালে আমি ১৭ নম্বর। অথচ সাংবাদিক ছাড়া এখানে ১৭ জন বক্তা নেই। এই আত্মসমালোচনা যদি করা না হয় প্রথম দিনে, আমার নামে যতো সুন্দর কথাই বলেন আমি খুশি হবো না। আমি প্রশংসা শুনতে আসিনি, বাস্তবতার নিরিখে এসেছি।
দৈনিক নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন বলেন,আমাদের দেশে ন্যায় নীতি ও নৈতিকতার অভাব। এগুলো প্রতিষ্ঠা করা না গেলে দেশের পরিবর্তন আসবে না। এজন্য সবাইকে একাত্ম হতে হবে। একাত্মতার বিকল্প নেই।
সমমনা রাজনৈতিক দলসমূহের সমন্বয়ক আহসান উল্লাহ শামীমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন দৈনিক বাংলাদেশ মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান কে এম আবু তাহের, তাঁতি দলের যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মনিরুজ্জামান মনির, জাতীয় লীগের নেতা শাহরিয়ার ইফতেখার ফুয়াদ, ছারছিনার পীর মাওলানা আরিফ বিল্লাহ, সাংবাদিক নেতা শহিদুল ইসলাম।