মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩, ১০:৩২ পূর্বাহ্ন

স্কুলশিক্ষার্থীদের ১০ ঘণ্টার পড়াশোনা ২ ঘণ্টায় নেমেছে

রিপোর্টারের নাম
  • প্রকাশিতঃ রবিবার, ২৮ জুন, ২০২০
  • ৩৬ জন নিউজটি পড়েছেন

করোনাভাইরাসের প্রকোপে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য সরকারের দুটি কার্যক্রম থাকার পরেও ৮০ শতাংশ পড়াশোনা কমেছে। আগে প্রতিদিন গড়ে পড়াশোনায় ১০ ঘণ্টা সময় ব্যয় হতো যা নেমেছে ২ ঘণ্টায়। এ ছাড়া শিশুশ্রম ও গৃহকর্ম বেড়েছে শিক্ষার্থীদের।

ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) এর এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। বিআইজিডির ‘কোভিড-১৯, স্কুলিং এন্ড লার্নিং’ শীর্ষক এ গবেষণায় মূলত গ্রামীণ বাংলাদেশকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এতে ৫ হাজার ১৯৩ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করেছে বিআইজিডি। ৭৫ শতাংশ গ্রামের শিক্ষার্থী এবং শহরের বস্তির শিক্ষার্থী ২৫ শতাংশ। তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে গত মে মাসে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে মেয়ে ৫৫ ভাগ ও ছেলে ৪৫ ভাগ, প্রাথমিক ৩৪ এবং মাধ্যমিক ৬৬ শতাংশ। বেসরকারি স্কুল ৫৭, সরকারি ৩৩ এবং মাদ্রাসা ১০ শতাংশ।

বিআইজিডি তাদের গবেষণায় বলেছে, করোনাভাইরাসের প্রভাবের আগে দিনে শিক্ষার্থীরা ১০ ঘণ্টা সময় ব্যয় করত, যেখানে এখন তা ২ ঘণ্টা হয়। অর্থাৎ আগের চেয়ে পড়াশোনা ৮০ ভাগ কমেছে। সরকার টেলিভিশনের মাধ্যমে ‘ঘরে বসে শিখি’ ও ‘আমার ঘরে আমার স্কুল’ নামে দুটি পাঠ কার্যক্রম চালু করেছে, যা দেখছে মাত্র ১৬ শতাংশ শিক্ষার্থী। ১ শতাংশ শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাস করছে। শিক্ষার্থীদের ৬২ ভাগের বাসায় টিভি এবং ৩০ ভাগের বাসায় ইন্টারনেট সুবিধা আছে।

গবেষণায় বলা হয়, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে মা-বাবার শিক্ষাগত যোগ্যতাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। যাদের মা-বাবার পড়াশোনা অন্তত এসএসসি পাস বা তার বেশি, তারা টিভিতে ও অনলাইনে ক্লাস বেশি করে।

মহামারির এই সময়ে পড়াশোনার কমার পাশাপাশি শিশুশ্রম বেড়েছে বলে জানিয়েছে বিআইজিডি। তারা জানায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের আগে ৪ শতাংশ শিক্ষার্থী ২ দুই ঘণ্টার বেশি আয়মূলক কাজে জড়িত ছিল যেটা এখন ১৬ শতাংশ হয়েছে। এ ছাড়া ঘরের কাজ আগে করত ১ শতাংশ, এখন করে ১৩ শতাংশ। গবেষণায় দেখানো হয়, এই সময়ে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা, অবসরসহ নিজেদের বিভিন্ন সৃষ্টিশীল কাজের সময়ও বেড়েছে। স্কুল বন্ধ হওয়ায় ৬ ঘণ্টা বা ৫০ শতাংশ বেঁচে যাওয়া সময় গবেষণায় অগ্রহণীয় হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের পরিবর্তনের বিষয়ও উঠে এসেছে বিআইজিডির গবেষণায়। করোনার আগে শিক্ষার্থীদের ৮৭ শতাংশ সুখী ছিল, এখন তা ৭২ শতাংশ। আগে ৭৩ শতাংশের কোনো চিন্তা ছিল না, যা এখন ৫৯ শতাংশ করে। করোনার আগে ১৪ শতাংশ দুঃখী ও ১০ শতাংশ ভীত ছিল। এখন এ পরিমাণ ৩২ ও ৩৬ শতাংশ।

বিআইজিডি বলছে, করোনাভাইরাসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে শিশুদের শিক্ষা, শেখা ও ভবিষ্যতে উপার্জনের ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। নিজে শেখা স্কুলে শেখার বিকল্প হতে পারে না। মহামারি শেষে শিক্ষার্থীদের স্কুলে ফিরিয়ে নেওয়া একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে। এ ছাড়া প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষা প্রতিশ্রুতিশীল তবে তা এখনো ততটা সুবিধাজনক নয়।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরির আর নিউজ
© All rights reserved © vira-l.com 2017-2022
themesba-lates1749691102
Bengali English