রাজশাহীর পবা উপজেলার এক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ১৪ বছর ধরে এক নারীকে নিপীড়নের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগী ওই নারী এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে পবার কর্ণহার থানায় লিখিতভাবে এ অভিযোগ করেছেন।
ওই চেয়ারম্যানের নাম কামরুল হাসান রাজ। তিনি দর্শনপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান। ভুক্তভোগী নারীর বয়স ৩০ বছর। তার বাড়ি পবা উপজেলার একটি গ্রামে।
ওই নারীর দাবি, প্রেমের ফাঁদে ফেলে চেয়ারম্যান তার সঙ্গে প্রথমে মেলামেশা করেন। এরপর তার ভিডিও ধারণ করা আছে জানিয়ে তাকে বারবার মিলিত হতে চেয়ারম্যান বাধ্য করেছেন।
ওই নারীর ভাষ্যমতে, ২০০৫ সালে কামরুল হাসান রাজের সঙ্গে তার পরিচয়। সে সময় রাজ তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। বিশ্বাস করে তিনি তার প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া দেন। এরপর তার সঙ্গে শারীরিকভাবে মিলিত হন।
পরবর্তীকালে রাজ তাকে জানান, তাদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও ধারণ করা আছে। তার ডাকে সাড়া না দিলে সেই ভিডিও ফাঁস করে দেয়া হবে। এভাবে কামরুল তাকে ১৪ বছর জিম্মি করে রেখেছেন।
ওই নারী জানান, কামরুল হাসান তাকে বিয়ে করবেন বলে আশ্বাস দিয়ে ছিলেন। কিন্তু পরে বিয়ে করেননি। উল্টো তিনিই অন্য এক যুবকের সঙ্গে বিয়ের ব্যবস্থা করে দেন। বাধ্য হয়ে তিনি বিয়েও করেন। এরপরও চেয়ারম্যান তাকে মুক্তি দেননি। যখন-তখন তার ডাকে সাড়া দিতে হতো। রাজশাহী মহানগরীতে নিজের ফাঁকা বাড়ি এবং বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে চেয়ারম্যান তার সঙ্গে মিলিত হতেন।
এ ধরনের পরিস্থিতিতে ভুক্তভোগী গৃহবধূ বিয়ের দাবি নিয়ে দর্শনপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে যান। চেয়ারম্যান তখন তাকে বের করে দেন। এরপর তিনি ইউপি কার্যালয়ের সামনেই বসে কান্নাকাটি শুরু করেন। পরে পুলিশ গিয়ে ওই নারীকে থানায় নিয়ে যায়। এরপর ওই নারী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে চেয়ারম্যান কামরুল হাসান রাজের মোবাইলে কল দেয়া হলেও তিনি ধরেননি। তবে কর্ণহার থানার ওসি আনোয়ার আলী তুহিন জানিয়েছেন, তার সঙ্গে চেয়ারম্যানের কথা হয়েছে। চেয়ারম্যান ওই নারীর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে জানিয়ে ওসি বলেন, ভুক্তভোগী নারীর বর্ণনা অনুযায়ী চেয়ারম্যান তার সঙ্গে মিলিত হতেন রাজশাহী মহানগর এলাকায়। সেটি তার এলাকা নয়। তারপরও অভিযোগের তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেলে এ ব্যাপারে থানায় ধর্ষণ মামলা রেকর্ড করা হবে।